বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ভারতের চেয়ে অনেকদিক থেকে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের মূল্য-আয় (পি/ই) অনুপাত অর্ধেকে। যে বাজারকে কোনভাবেই অতিমূল্যায়িত বলা যায় না। তারপরেও কতিপয় আলোচক তথ্য-উপাত্ত ছাড়াই গণমাধ্যমে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে মুদ্রা বাজার, শেয়ারবাজার, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কার্যক্রমকে দ্বিধাগ্রস্ত করছে। একইসঙ্গে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়।
সোমবার (০৯ আগস্ট) বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণরের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিএমবিএর সভাপতি ছায়েদুর রহমান ও সাধারন সম্পাদক রিয়াদ মতিন সাক্ষরিত এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে কিছুদিন যাবৎ শেয়ারবাজার অতিমূল্যায়িত বলে বিভিন্ন বক্তব্য দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের শেয়ারবাজার অতি মূল্যায়িত নয়। ভারতের থেকে মাথাপিছু আয় বেশী, জিডিপি গ্রোথ বেশী, ডিভিডেন্ড ইল্ড বেশী সত্ত্বেও বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের পি/ই ভারতের অর্ধেক।
তারপরেও মুদ্রানীতিকে কেন্দ্র করে কতিপয় আলোচক গণমাধ্যমে কিছু বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রন ও তদারকির আলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে, এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে সেটাতে যেন শেয়ারবাজারে ক্ষতি না হয় এবং ভুল উপস্থাপন না হয়, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুদৃষ্টি ও সহযোগীতা কামনা করেছে বিএমবিএ। অন্যথায় শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট নেতিবাচক মন্তব্য বাজারকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে।
আরও পড়ুন……
শেয়ারবাজার নিয়ে অযৌক্তিক মন্তব্য না করার আহবান
প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের নিট মুনাফার ৬৪ শতাংশ এসেছে শেয়ার ব্যবসা থেকে
চিঠিতে বলা হয়েছে, তথ্য উপাত্ত ছাড়া বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে আতঙ্ক তৈরী করে শেয়ারবাজারের ক্ষতি সাধন করা হলে, তা দেশের অর্থনীতির জন্যই খারাপ সংবাদ বয়ে আনবে। এটা সরকারের জন্যও বিরক্তির কারন হতে পারে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রনের কোনো নির্দেশনাকে অপব্যাখ্যা বা অপব্যবহার করে যেন শেয়ারবাজারে অস্থিরতা তৈরী করতে না পারে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সদয় দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে শেয়ারবাজার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য সকল অংশীজনকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহবান করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতিকালে মুদ্রানীতি নিয়ে আলোচনাকালে একজন বিশেষজ্ঞ আলোচক বলেছেন “শেয়ারবাজার এখন চাঙ্গা। এটাকে আর বেশী দূর যেতে দেওয়া ঠিক হবে না”। উনি মুদ্রানীতি নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে কিসের উপর ভিত্তি করে এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার করেছেন, সে সম্পর্কে কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেন নাই। এধরনের বক্তব্য স্বাভাবিকভাবেই বিনিয়োগকারীসহ শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট সকলকেই হতাশ করেছে। তিনি ছাড়া আরও কতিপয় ব্যক্তি তথ্য-উপাত্ত ছাড়াই শেয়ারবাজার অতি মূল্যায়িত বা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মতামত প্রদান বা গণমাধ্যমে ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করছেন।
দীর্ঘ দিন শেয়ারবাজার নেতিবাচক অবস্থায় থাকার পর বিগত ১৪ মাস যাবৎ বাংলাদেশের শেয়ারবাজার একটি ইতিবাচক ধারায় এসেছে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও অংশ গ্রহন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছে বিএমবিএ।
বিজনেস আওয়ার/০৯ আগস্ট, ২০২১/আরএ